রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নৌকার পথের কাঁটা ট্রাক-ঈগল-ঢেঁকি

তোফায়েল হোসেন জাকির: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে নৌকার প্রার্থীসহ ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এতে করে এখানকার কতিপয় দলীয় নেতাকর্মী বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। যার কারণে নৌকা প্রার্থীর পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাক, ঈগল ও ঢেঁকি প্রতীক। ইতোমধ্যে ভোটযুদ্ধে মরিয়া হয়ে ওঠেছে তারা।

জানা যায়, ওই আসন থেকে লড়ছেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান এমপি উম্মে কুলসুম স্মৃতি (নৌকা), আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব (ট্রাক), জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য মফিজুল হক সরকার (ঈগল), ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজার রহমান (ঢেঁকি), জাতীয় পার্টির মইনুর রাব্বী চৌধুরী (লাঙ্গল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি (মশাল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির জাহাঙ্গীর আলম (আম),  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মনজুরুল হক (নোঙ্গর), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মাহমুদুল হক (হাতঘড়ি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মোস্তফা মনিরুজ্জামান (গামছা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাহিদ নিউ (কেটলি)।

এদিকে, এই নির্বাচনকে ঘিরে নানা প্রতিশ্রুতির ভাণ্ডার নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। কর্মী-সমর্থকরা মিছিল-মিটিংয়ে উজ্জ্বীবিত হয়ে ওঠেছে। নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা। এরই মধ্যে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিশেষ করে নৌকা, ট্রাক, ঈগল ও ঢেঁকি প্রতীকের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ওঠেছে। তবে আওয়ামী লীগের ওই ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটের মাঠে সরব থাকায় নৌকার প্রার্থী অনেকটাই বেকায়দায় আছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ইউনুস আলী সরকার। এরপর থেকে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে এই আসনে। এ ধারা অব্যাহত রেখে গত ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের নৌকা প্রতীকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এই জয়লাভের এক বছর যেতে না যেতেই অসুস্থজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ইউনুস আলী সরকার। বিদ্যমান পরিস্থিতে একাদশের শূন্য এই আসনে উপ-নির্বাচনে নৌকা নিয়ে এমপি হয়েছেন উম্মে কুলসুস স্মৃতি। তবে ইউনুস আলী সরকারের উন্নয়নের পর থেকে এ আসনে তেমন কোন উন্নয়ন কাজ হয়রি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এদিকে কিছু সংখ্যাক ভোটার জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও সরকার গঠন করতে পারে আওয়ামী লীগ। তাই এই দল থেকে উম্মে কুলসুম স্মৃতিকে এমপি নির্বাচিত করা হলে এ আসনে এবার উন্নয়নের সম্ভাবনা আছে।

অপরদিকে বেশ কিছু ভোটার বলেছেন, প্রয়াত এমপি ডা. ইউনুস আলীর পর থেকে এ আসনে উল্লেখযোগ্য কোন উন্নয়ন চোখে পড়েনি।  তাই নতুন মুখ দেখা দরকার। যেহেতু স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, সেহেতু  তাদের  মার্কার শক্তিও নৌকার কোন অংশে কম নয়।

গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে ৩১, গাইবান্ধা-৩ আসনটি গঠিত। এখানে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৮৭৬ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪১, নারী ২ লাখ  ৪২ হাজার  ২৮  ও  তৃতীয় লিঙ্গের ৭ জন। আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

জনপ্রিয়

নৌকার পথের কাঁটা ট্রাক-ঈগল-ঢেঁকি

প্রকাশের সময়: ০২:০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩

তোফায়েল হোসেন জাকির: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে নৌকার প্রার্থীসহ ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এতে করে এখানকার কতিপয় দলীয় নেতাকর্মী বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। যার কারণে নৌকা প্রার্থীর পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাক, ঈগল ও ঢেঁকি প্রতীক। ইতোমধ্যে ভোটযুদ্ধে মরিয়া হয়ে ওঠেছে তারা।

জানা যায়, ওই আসন থেকে লড়ছেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান এমপি উম্মে কুলসুম স্মৃতি (নৌকা), আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব (ট্রাক), জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য মফিজুল হক সরকার (ঈগল), ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজার রহমান (ঢেঁকি), জাতীয় পার্টির মইনুর রাব্বী চৌধুরী (লাঙ্গল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি (মশাল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির জাহাঙ্গীর আলম (আম),  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মনজুরুল হক (নোঙ্গর), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মাহমুদুল হক (হাতঘড়ি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মোস্তফা মনিরুজ্জামান (গামছা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাহিদ নিউ (কেটলি)।

এদিকে, এই নির্বাচনকে ঘিরে নানা প্রতিশ্রুতির ভাণ্ডার নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। কর্মী-সমর্থকরা মিছিল-মিটিংয়ে উজ্জ্বীবিত হয়ে ওঠেছে। নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা। এরই মধ্যে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিশেষ করে নৌকা, ট্রাক, ঈগল ও ঢেঁকি প্রতীকের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ওঠেছে। তবে আওয়ামী লীগের ওই ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটের মাঠে সরব থাকায় নৌকার প্রার্থী অনেকটাই বেকায়দায় আছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ইউনুস আলী সরকার। এরপর থেকে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে এই আসনে। এ ধারা অব্যাহত রেখে গত ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের নৌকা প্রতীকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এই জয়লাভের এক বছর যেতে না যেতেই অসুস্থজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ইউনুস আলী সরকার। বিদ্যমান পরিস্থিতে একাদশের শূন্য এই আসনে উপ-নির্বাচনে নৌকা নিয়ে এমপি হয়েছেন উম্মে কুলসুস স্মৃতি। তবে ইউনুস আলী সরকারের উন্নয়নের পর থেকে এ আসনে তেমন কোন উন্নয়ন কাজ হয়রি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এদিকে কিছু সংখ্যাক ভোটার জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও সরকার গঠন করতে পারে আওয়ামী লীগ। তাই এই দল থেকে উম্মে কুলসুম স্মৃতিকে এমপি নির্বাচিত করা হলে এ আসনে এবার উন্নয়নের সম্ভাবনা আছে।

অপরদিকে বেশ কিছু ভোটার বলেছেন, প্রয়াত এমপি ডা. ইউনুস আলীর পর থেকে এ আসনে উল্লেখযোগ্য কোন উন্নয়ন চোখে পড়েনি।  তাই নতুন মুখ দেখা দরকার। যেহেতু স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, সেহেতু  তাদের  মার্কার শক্তিও নৌকার কোন অংশে কম নয়।

গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে ৩১, গাইবান্ধা-৩ আসনটি গঠিত। এখানে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৮৭৬ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪১, নারী ২ লাখ  ৪২ হাজার  ২৮  ও  তৃতীয় লিঙ্গের ৭ জন। আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।