বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাতার আবেদন করতে গিয়ে জানলেন তিনি মৃত! 

আজাহার আলী জন্ম ১৯৫৫ সালে। বয়স ৬৫ বছর। দিনমজুর আজাহার আলীর অভাব অনটনের সংসার। সম্প্রতি সরকারী সহায়তার বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারে তিনি মৃত!
জীবিত থাকলেও কাগজে কলমে এখন মৃত তাই তিনি বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারছেন না। তথ্য সংগ্রকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দেওয়ায় এ সমস্যায় পড়েছেন তিনি। তথ্য সংগ্রহকারীদের ভুলে জীবিত থেকেও ভোটার তালিকায় এখন মৃত আজহার আলী।
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের পাইকেন্টারী গ্রামে আজাহার আলীর বাড়ি। ভোটার তালিকায় মৃত হলেন কি ভাবে জানতে চাইলে আজাহার আলী বলেন  ‘ভোটের লিস্টে আমি কিবা কইরা মইরা গেলাম বুঝলাম না ‘! জিন্দা মানুষ আমি আর ভোট অফিস(উপজেলা নির্বাচন অফিস) আমাক মাইরা ফালাইলো ?
আজাহার আলী ও তার প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি পেশায় দিনমজুর।কখনো অন্যের জমিতে কাজ করে আবার কখনও নদী থেকে মাছ ধরে বাজার বিক্রি করে সংসার চলে নিঃসন্তান এই দম্পতির। অভাবের কারনে মাঝেমধ্যে প্রতিবেশিরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। নদী ভাঙ্গনের ফলে নিজের বসতভিটা হারিয়ে অন্যের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছেন তিনি। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার পরিচিতি নম্বর ৪৯১০৮৫৭৪৫৫৪৫৯ জন্ম ১৯৫৫ সালের ২০ ডিসেম্বর।
আজাহার আলী বলেন, বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে জানানো হয় সরকারী কাগজে তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন।পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তাঁকে মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে তিনি বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারেন নি।এই বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও  উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও সমস্যার কোন সমাধান করতে পারেননি।
৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম মিয়া বলেন,গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আজাহার ভোট দিতে পারেনি। তখন আমরা ভেবেছিলাম হয়ত ভুলে নাম বাদ পরেছে। কিন্তু এখন দেখছি তাকে মৃত দেখানো হয়ছে । এই ভুল সংশোধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে।
কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু বলেন,  আজাহার আলীকে আমি চিনি। তিনি এখনও জীবিত আছেন। তিনি কিভাবে মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন বিষয়টি বুঝতে পারছি না। তিনি ধারণা থেকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় হয়তবা আজাহার আলীকে মৃত দেখিয়েছেন। ভোটার তালিকায় মৃত হলে তিনি সরকারী নানা সুবিধা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হবে বলেও জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাজীবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম সাইফুর রহমান জাগো২৪.নেট-কে বলেন, বিষয়টি খুব দুঃখজনক। শুনেছি আজাহার আলী আবেদন করেছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন এমন হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানিয়েছেন হয়তবা তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় ভুল করে তার মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিলো সেকারণেই তাকে মৃত দেখানো হচ্ছে।
জনপ্রিয়

ভাতার আবেদন করতে গিয়ে জানলেন তিনি মৃত! 

প্রকাশের সময়: ১১:৩৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
আজাহার আলী জন্ম ১৯৫৫ সালে। বয়স ৬৫ বছর। দিনমজুর আজাহার আলীর অভাব অনটনের সংসার। সম্প্রতি সরকারী সহায়তার বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারে তিনি মৃত!
জীবিত থাকলেও কাগজে কলমে এখন মৃত তাই তিনি বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারছেন না। তথ্য সংগ্রকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দেওয়ায় এ সমস্যায় পড়েছেন তিনি। তথ্য সংগ্রহকারীদের ভুলে জীবিত থেকেও ভোটার তালিকায় এখন মৃত আজহার আলী।
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের পাইকেন্টারী গ্রামে আজাহার আলীর বাড়ি। ভোটার তালিকায় মৃত হলেন কি ভাবে জানতে চাইলে আজাহার আলী বলেন  ‘ভোটের লিস্টে আমি কিবা কইরা মইরা গেলাম বুঝলাম না ‘! জিন্দা মানুষ আমি আর ভোট অফিস(উপজেলা নির্বাচন অফিস) আমাক মাইরা ফালাইলো ?
আজাহার আলী ও তার প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি পেশায় দিনমজুর।কখনো অন্যের জমিতে কাজ করে আবার কখনও নদী থেকে মাছ ধরে বাজার বিক্রি করে সংসার চলে নিঃসন্তান এই দম্পতির। অভাবের কারনে মাঝেমধ্যে প্রতিবেশিরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। নদী ভাঙ্গনের ফলে নিজের বসতভিটা হারিয়ে অন্যের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছেন তিনি। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার পরিচিতি নম্বর ৪৯১০৮৫৭৪৫৫৪৫৯ জন্ম ১৯৫৫ সালের ২০ ডিসেম্বর।
আজাহার আলী বলেন, বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে জানানো হয় সরকারী কাগজে তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন।পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তাঁকে মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে তিনি বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারেন নি।এই বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও  উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও সমস্যার কোন সমাধান করতে পারেননি।
৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম মিয়া বলেন,গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আজাহার ভোট দিতে পারেনি। তখন আমরা ভেবেছিলাম হয়ত ভুলে নাম বাদ পরেছে। কিন্তু এখন দেখছি তাকে মৃত দেখানো হয়ছে । এই ভুল সংশোধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে।
কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু বলেন,  আজাহার আলীকে আমি চিনি। তিনি এখনও জীবিত আছেন। তিনি কিভাবে মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন বিষয়টি বুঝতে পারছি না। তিনি ধারণা থেকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় হয়তবা আজাহার আলীকে মৃত দেখিয়েছেন। ভোটার তালিকায় মৃত হলে তিনি সরকারী নানা সুবিধা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হবে বলেও জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাজীবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম সাইফুর রহমান জাগো২৪.নেট-কে বলেন, বিষয়টি খুব দুঃখজনক। শুনেছি আজাহার আলী আবেদন করেছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন এমন হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানিয়েছেন হয়তবা তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় ভুল করে তার মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিলো সেকারণেই তাকে মৃত দেখানো হচ্ছে।