বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধানক্ষেতে পার্চিং, দমন হবে পোকা

তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধার নিভৃত অঞ্চলে কৃষকরা রোপন করেছে রোপা আমন ধানের চারা। ইতোমধ্যে নজর কাড়ছে সবুজের সামাহার। অধিক ফলন ঘরে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে খেত পরিচর্যাসহ সার প্রয়োগ। সেই সাথে পোকার আক্রমণে যেন ফসলের ক্ষতি না হয়, সেজন্যে স্থাপন করা হচ্ছে পার্চিং। অর্থাৎ গাছের ডাল বা কঞ্চি পূঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এই পার্চিংয়ে বসিয়ে ক্ষতিকারক পোকা দমন করছে ঝাঁক-ঝাঁক পাখি।

সম্প্রতি গাইবান্ধার কৃষকের ধানক্ষেতে দেখা গেছে- পার্চিং বসানোর চিত্র। এরই মধ্যে একদল ফেচকা পাখি উড়ে এসে জুড়ে বসেছে এই পার্চিংয়ে। ওঁৎপেতে এসব পাখি দমন করছে ক্ষতিকারক পোকা। যার কারণে ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, রোপা আমন ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে পার্চিং পদ্ধতি একটি সফল প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে সহজে ক্ষতিকারক পোকা নিধন ও আর্থিক সাশ্রয় হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এই পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে। এতে কীটনাশক ছিঁটিয়ে পোকা দমনের প্রয়োজন হয় না। এখন প্রকৃতির মুক্ত পরিবেশে উড়ন্ত পাখি যেন কৃষকের পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পলাশবাড়ীর কৃষক আনজারুল মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরা ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বোরো আবাদে খরচ বেশী হচ্ছে তার। তাই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং স্থাপনের মাধ্যমে পাখি দিয়ে পোকামাকড়র দমন করছেন।

গোবিন্দগঞ্জের নজরুল ইসলাম নামের আরেক বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে পোঁতা পার্চিংয়ে বসে বসে পাখিরা পোকা খায়। এতে করে ফসল ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছি। তেমনি আর্থিক সাশ্রয়ও হচ্ছে।

পলাশবাড়ীর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমা সিদ্দিকা বলেন, মাজরা পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই। একদম পরিবাশেবান্ধব পদ্ধতি। জমিতে চারা রোপণের এক সপ্তাহের মধ্যে এক বিঘা জমিতে ৭ থেকে ১০টি ডাল মাটিতে পোতা যাবে। এ নিয়ে কৃষকদের আগ্রহ করে তোলা হচ্ছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ সাড়ে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এই আবাদে কৃষকদের লাভবান করতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পোকা দমনে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং ব্যবহারসহ কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

জনপ্রিয়

ধানক্ষেতে পার্চিং, দমন হবে পোকা

প্রকাশের সময়: ১০:০৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধার নিভৃত অঞ্চলে কৃষকরা রোপন করেছে রোপা আমন ধানের চারা। ইতোমধ্যে নজর কাড়ছে সবুজের সামাহার। অধিক ফলন ঘরে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে খেত পরিচর্যাসহ সার প্রয়োগ। সেই সাথে পোকার আক্রমণে যেন ফসলের ক্ষতি না হয়, সেজন্যে স্থাপন করা হচ্ছে পার্চিং। অর্থাৎ গাছের ডাল বা কঞ্চি পূঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এই পার্চিংয়ে বসিয়ে ক্ষতিকারক পোকা দমন করছে ঝাঁক-ঝাঁক পাখি।

সম্প্রতি গাইবান্ধার কৃষকের ধানক্ষেতে দেখা গেছে- পার্চিং বসানোর চিত্র। এরই মধ্যে একদল ফেচকা পাখি উড়ে এসে জুড়ে বসেছে এই পার্চিংয়ে। ওঁৎপেতে এসব পাখি দমন করছে ক্ষতিকারক পোকা। যার কারণে ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, রোপা আমন ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে পার্চিং পদ্ধতি একটি সফল প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে সহজে ক্ষতিকারক পোকা নিধন ও আর্থিক সাশ্রয় হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এই পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে। এতে কীটনাশক ছিঁটিয়ে পোকা দমনের প্রয়োজন হয় না। এখন প্রকৃতির মুক্ত পরিবেশে উড়ন্ত পাখি যেন কৃষকের পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পলাশবাড়ীর কৃষক আনজারুল মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরা ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বোরো আবাদে খরচ বেশী হচ্ছে তার। তাই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং স্থাপনের মাধ্যমে পাখি দিয়ে পোকামাকড়র দমন করছেন।

গোবিন্দগঞ্জের নজরুল ইসলাম নামের আরেক বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে পোঁতা পার্চিংয়ে বসে বসে পাখিরা পোকা খায়। এতে করে ফসল ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছি। তেমনি আর্থিক সাশ্রয়ও হচ্ছে।

পলাশবাড়ীর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমা সিদ্দিকা বলেন, মাজরা পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই। একদম পরিবাশেবান্ধব পদ্ধতি। জমিতে চারা রোপণের এক সপ্তাহের মধ্যে এক বিঘা জমিতে ৭ থেকে ১০টি ডাল মাটিতে পোতা যাবে। এ নিয়ে কৃষকদের আগ্রহ করে তোলা হচ্ছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ সাড়ে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এই আবাদে কৃষকদের লাভবান করতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পোকা দমনে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং ব্যবহারসহ কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।