মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
খানসামায় পোল্ট্রি খামারে অগ্নিকাণ্ড, সাড়ে ১০ লাখ টাকা ক্ষতি লড়াইয়ের মাধ্যমে আমরা তিস্তার পানি নিয়ে আসব:  মির্জা ফখরুল পাবনায় দূর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন ৮ বছর ধরে পড়ে আছে সেতু! বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা সাদুল্লাপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ-সমাবেশ বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তিস্তারপাড়ের কষ্ট লাঘব করা হবে- বরকত উল্লাহ বুলু সাদুল্লাপুরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় জামায়াতের নেতাকর্মী আসামি, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন  সাদুল্লাপুরে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া, বিষপান স্বামীর সাদুল্লাপুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন গাইবান্ধার সামগ্রিক উন্নয়নে সমস্যা চিহ্নিতকরণ-সমাধান করণীয় শীর্ষক সেমিনার

গাইবান্ধায় ৬৭ হাজার ৭২৯ পরিবার পানিবন্দি

তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪

তোফায়েল হোসেন জাকির: বন্যায় গাইবান্ধার চারটি উপজেলার হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া করতোয়া ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। এ অবস্থায় টানা কয়েক দিনের স্থায়ীত্ব বন্যায় প্লাবিত হওয়া মানুষদের বেড়েঠে দুর্ভোগ।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল ৩ টায় ওইসব নদ-নদী পানিস্তর পরিমাপ অনুযায়ী গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোরুমে দায়িত্বে থাকা রাকিবুল ইসলাম জানান- গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ৪ সেন্টিমিটার কমিয়ে ৮৪ ও ঘাঘটের পানি ৪ সেন্টিমিটার কমিয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া করতোয়া পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৫ ও তিস্তার পানি ৩০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

জানা যায়, গত কয়েকদিনে স্থায়ীত্বে এই বন্যা পরিস্থিতি এখনও উন্নতি হয়নি। ইতোমধ্যে পানিবন্দি পরিবারে দেখা দিয়েছে- আবাসন, স্যানিটেশন বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। যার ফলে বন্যা আক্রান্ত মানুষগুলোর দুর্গতি বড়েই চলেছে। সাময়িক মৌলিক চাহিদাপূরণের চেষ্টা তারা ছুটছেন এদিক-সেদিক। এমনটি জানিয়েছে- বন্যা কবলিত মানুষেরা।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, বন্যায় গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি, কামারজানি, মোল্লারচর, ঘাগোয়া, ও ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি, ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি  এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লালচামার, চর কাপাসিয়া, কালাইসোতা, সিঙ্গিজানী, ভোরের পাখি, যুগিরভিটা, কাজিয়ার চর, বাদামের চর,উজানবুড়াইল, বোচাগারী, ভাটিবুড়াইল, কেরানীরচর, পোড়ারচর, তারাপুর,  হরিপুর ইউনিয়ন ও সাঘাটা উপজেলা ভরতখালী ও হলদিয়া ইউনিয়নসহ আরও বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা দুর্গত মানুষরা বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র, বাঁধ ও স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।

বিদ্যামান পরিস্থিতিতে জেলার চরাঞ্চলের রাস্তাঘাটসহ বাড়িঘর ডুবে গেছে। আমন চারা, পাট ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল পানি নিচে তলিয়েছে। এসব এলাকার মানুষরা গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। সেইসাথে নদী ও বাঁধ ভাঙনও দেখা দিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় ইতোমধ্যে শত প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (৬ জুলাই) সকালের দিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়- গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর ৫টি, সুন্দরগঞ্জ ৯টি, সাঘাটা  ৮টি ও ফুলছড়ি ৭ টি  ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে। এখানকার ৬৭ হাজার ৭২৯ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া বন্যার্ত মানুষদের জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী ১৮১ টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা আছে। এখানকার সাঘাটা ৩৬টি, সুন্দরগঞ্জ ৪৮টি, ফুলছড়ি ২৩টি, সদর ২৪টি, সাদুল্লাপুর ৩৩টি, পলাশবাড়ী ৬টি ও  গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১১টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে।

গাইবন্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া বলেন- বন্যায় গৃহীত কার্যক্রমে ৩ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬৫ মেট্রিকটন জিআর চাল, ১০ লাখ টাকা উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৬৫ মেট্রিকটন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তা বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত আছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, নদ-নদী ও বাঁধের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা, স্পীড বোট প্রস্তুত রয়েছে। জেলা এবং উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল, কৃষি, স্বেচ্ছাসেবক এবং লাইভস্টোক দল গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রচার-প্রচারণা চলমান রয়েছে।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট

কারিগরি সহায়তায় : শাহরিয়ার হোসাইন